settings icon
share icon
প্রশ্ন

তীত পুস্তক

উত্তর


লেখকঃ তীত ১:১ পদ পৌলকে উক্ত পুস্তকটির লেখক হিসেবে চিহ্নিত করে।

লেখার সময়কালঃ তীতের প্রতি চিঠিটি আনুমানিক ৬৬ খ্রীষ্টাব্দে লেখা হয়েছিল। পৌলের অনেক ভ্রমণ ভালভাবে নথিভুক্ত হয়েছে এবং দেখায় যে, তিনি এপিরাসের নীকপলি থেকে তীতকে লিখেছিলেন। কিছু বাইবেলে এটি দেখানো হতে পারে যে, পৌল মাকিদনিয়ার নীকপলি হতে এটি লিখেছিলেন। যাহোক, এমন কোন স্থানের কথা জানা নেই এবং তা স্বীকার করারও কোন কারণ নেই, কারণ সেগুলো নির্ভরযোগ্য নয়।

লেখার উদ্দেশ্যঃ তীতের চিঠিটি তীমথিয়ের কাছে লেখা দু’টি চিঠির মতো যাজকীয় চিঠিগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে পরিচিত। এই চিঠিটি প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন তার ভাই তীতকে বিশ্বাসে উৎসাহিত করার জন্য যাকে তিনি ক্রীতে মণ্ডলীর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য রেখে গিয়েছিলেন যা পৌল তার একটি মিশন যাত্রায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন (তীত ১:৫ পদ)। এই চিঠিটি তীতকে পরামর্শ দেয় যে, মণ্ডলীর নেতাদের মধ্যে কী কী গুণাবলী সন্ধান করতে হবে। তিনি তীতকে ক্রীট দ্বীপে বসবাসকারীদের খ্যাতি সম্পর্কে সতর্ক করেন (তীত ১:১২ পদ)।

মণ্ডলীর একজন নেতার কী কী গুণাবলী সন্ধান করতে হবে সে সম্পর্কে তীতকে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি পৌল তীতকে নীকপলিতে ফিরে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। অন্য কথায়, পৌল তীত এবং অন্যান্যদের শিষ্য করতে থাকেন যখন তারা প্রভুর অনুগ্রহে বেড়ে ওঠেন (তীত ৩:১৩ পদ)।

মূল বা প্রধান পদসমূহঃ তীত ১:৫ পদ, “আমি তোমাকে এই কারণে ক্রীতীতে রাখিয়া আসিয়াছি, যেন যাহা যাহা অসম্পূর্ণ, তুমি তাহা ঠিক করিয়া দেও, এবং যেমন আমি তোমাকে আদেশ দিয়াছিলাম, প্রত্যেক নগরে প্রাচীনদিগকে নিযুক্ত কর।”

তীত ১:১৬ পদ, “তাহারা স্বীকার করে যে, ঈশ্বরকে জানে, কিন্তু কার্যে তাঁহাকে অস্বীকার করে; তাহারা ঘৃণাসম্পদ ও অবাধ্য এবং সমস্ত সৎক্রিয়ার পক্ষে অপ্রামাণিক।”

তীত ২:১৫ পদ, “তুমি এই সকল কথা বল, এবং সম্পূর্ণ ক্ষমতার সহিত উপদেশ দেও, ও অনুযোগ কর; তোমাকে তুচ্ছ করিতে কাহকেও দিও না।”

তীত ৩:৩-৬ পদ, “কেননা পূর্বে আমরাও নির্বোধ, অবাধ্য, ভ্রান্ত, নানাবিধ অভিলাষের ও সুখভোগের দাস, হিংসাতে ও মাৎসর্যে কালক্ষেপকারী, ঘৃণার্হ ও পরস্পর দ্বেষকারী ছিলাম। কিন্তু যখন আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বরের মধুর স্বভাব এবং মানবজাতির প্রতি প্রেম প্রকাশিত হইল, তখন তিনি আমাদের কৃত ধর্মকর্মহেতু নয়, কিন্তু আপনার দয়ানুসারে, পুনর্জন্মের স্নান ও পবিত্র আত্মার নূতনীকরণ দ্বারা আমাদিগকে পরিত্রাণ করিলেন, সেই আত্মাকে তিনি আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমাদের উপরে প্রচুররূপে ঢালিয়া দিলেন।”

সারসংক্ষেপঃ তীত যখন তার পরামর্শদাতা পৌলের কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছিলেন তখন তা কতই না চমৎকার ছিল। পূর্ব বিশ্ব জুড়ে বেশ কয়েকটি মণ্ডলী প্রতিষ্ঠা করার পর পৌল একজন অনেক সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন, এবং তিনি ঠিক তাই-ই ছিলেন। প্রেরিতের

এই বিখ্যাত ভূমিকাটি তীত এর দ্বারা পাঠ করা হবে “পিতা ঈশ্বর এবং আমাদের ত্রাণকর্তা খ্রীষ্ট যীশু হইতে অনুগ্রহ ও শান্তি বর্তুক” (তীত ১:৪ পদ)।

ক্রীত দ্বীপ যেখানে পৌল তীতকে মণ্ডলীর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য রেখে গিয়েছিলেন সেখানে দ্বীপের আদিবাসী এবং যিহূদীদের বসবাস ছিল যারা যীশু খ্রীষ্টের সত্যতা জানত না (তীত ১:১২-১৪ পদ)। পৌল অনুভব করেছিলেন যে, তীতের সাথে অনুসরণ করার জন্য তাকে নির্দেশ দেওয়া এবং ক্রীতের মণ্ডলীর মধ্যে নেতাদের বিকাশে উৎসাহিত করা তার দায়িত্ব। প্রেরিত পৌল যেমন তীতকে তার নেতাদের সন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তেমনি পৌল পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, কীভাবে তীত নেতাদের নির্দেশ দেবেন যাতে খ্রীষ্টের প্রতি তাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। তার নির্দশাবলী সব বয়সের পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্য অন্তর্ভুক্ত ছিল (তীত ২:১-৮ পদ)। তীতকে খ্রীষ্টে তার বিশ্বাস অব্যাহত রাখতে সাহায্য করার জন্য পৌল তীতকে এবং তার সাথে মণ্ডলীর আরও দু’জন সদস্যকে নীকপলিতে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন (তীত ৩:১২-১৩ পদ)।

যোগসূত্রঃ আবারও পৌল মণ্ডলীর নেতাদের যিহূদীদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন মনে করেন, যারা পরিত্রাণ সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করে এমন করুণার উপহারে কাজ যোগ করতে চেয়েছিলেন। তিনি তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন যারা বিদ্রোহী প্রতারক, বিশেষ করে যারা ত্বকছেদ দাবি করে যাচ্ছিল এবং মোশির আইন-কানুনের আচার অনুষ্ঠান মেনে চলা তখনও প্রয়োজনীয় ছিল (তীত ১:১০-১১ পদ)। এটি হল পৌলের চিঠিগুলির বৈশিষ্ট্য এবং তীত পুস্তকে পুনরাবৃত্তির একটি বিষয়বস্তু, তিনি তাদের মুখ বন্ধ করতে এতদূর যান তাদের মুখ বন্ধ করতে হবে বলার জন্য।

বাস্তব বা কার্যকরী প্রয়োগঃ প্রেরিত পৌল আমাদের মনোযোগের দাবিদার যখন আমরা কীভাবে আমাদের প্রভুকে সন্তুষ্ট করে জীবনযাপন করতে হয় তার নির্দেশনার জন্য বাইবেলের দিকে দৃষ্টি দিয়ে থাকি। আমরা শিখতে পারি আমাদের কী এড়ানো উচিত এবং সেই সাথে আমাদের যা অনুকরণ করা উচিত। পৌল আমাদের পরামর্শ দেন যেন আমরা খাঁটি হতে চাই, কারণ আমরা এমন বিষয়গুলি এড়িয়ে চলি মন এবং বিবেককে কলুষিত করে। এবং তারপর পৌল এমন একটি বিবৃতি দেন যা কখনই ভুলে যাওয়া উচিত নয়: “তাহারা স্বীকার করে যে, ঈশ্বরকে জানে, কিন্তু কার্যে তাঁহাকে অস্বীকার করে; তাহারা ঘৃণাসম্পদ ও অবাধ্য এবং সমস্ত সৎক্রিয়ার পক্ষে অপ্রামাণিক” (তীত ১:১৬ পদ)। খ্রীষ্টিয়ান হিসেবে আমাদের অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখতে হবে যে, আমাদের জীবন খ্রীষ্টে আমাদের বিশ্বাসের দাবির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ (২করিন্থীয় ১৩:৫ পদ)।

এই সতর্কতার সাথে সাথে পৌল আমাদেরকেও বলেন কীভাবে ঈশ্বরকে অস্বীকার করা এড়াতে হয়: তীত ৩:৩-৬ পদে লেখা আছে, “কিন্তু আপনার দয়ানুসারে, পুনর্জন্মের স্নান ও পবিত্র আত্মার নূতনীকরণ দ্বারা আমাদিগকে পরিত্রাণ করিলেন, সেই আত্মাকে তিনি আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমাদের উপরে প্রচুররূপে ঢালিয়া দিলেন” (তীত ৩:৫খ-৬ পদ)। পবিত্র আত্মার মাধ্যমে আমাদের মনের দৈনিক পুনর্জন্ম চাওয়ার মাধ্যমে আমরা এমন খ্রীষ্টিয়ানদের মধ্যে বিকশিত হতে পারি যারা আমাদের জীবনযাপনের মাধ্যমে ঈশ্বরকে সম্মান করেন।

English



বাংলা হোম পেজে ফিরে যান

তীত পুস্তক
© Copyright Got Questions Ministries